Home সম্পাদকীয় দুর্গাপুর পুর্ব – পশ্চিম, গলসিতে তৃণমূল নিজের ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতে পারবে?...

দুর্গাপুর পুর্ব – পশ্চিম, গলসিতে তৃণমূল নিজের ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতে পারবে? দিলীপ ঘোষের ভরসা সিপিএম ভোট?

নিজস্ব প্রতিনিধি, বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, দুর্গাপুর: আলুওয়ালিয়ার আসনে তিনি লড়ছেন। আলুওয়ালিয়াকে জয় এনে দিয়েছিল দুর্গাপুর পুর্ব, পশ্চিম আসন, গলসিতেও মিলেছিল লিড। কিন্তু এবার কি মিলবে সেই লিড? নাকি এখানেই দিলীপ ঘোষের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে পুর্ণচ্ছেদ পড়বে? দুর্গাপুর পুর্ব, দুর্গাপুর পশ্চিম এবং গলসি বিধানসভা ইভিএমে কতটা দিলীপ ঘোষের পক্ষে থাকবে তার উপরেই নির্ভর করছে দিলীপ ঘোষের লড়াইতে টিকে থাকা।

দুর্গাপুর পশ্চিম: বিধায়ক বিজেপির লক্ষণ ঘরুই। রাজনৈতিক মহল কিন্তু বলছে ২০২১ সালে বিজেপির জয় সিপিএমের অবদানেই সম্ভব হয়েছে, সিপিএম নিজে লড়লে এ ফল হতো না। বর্ধমান দুর্গাপুর আসনে সাংসদ বিজেপির, কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপির, কিন্তু শিল্প নেই। শেষ মুহুর্তে অমিত শাহ শিল্প নিয়ে ড্যামেজ কন্ট্রোলে সার কারখানার কথা বলছেন। কিন্তু সার কারখানা চালু হবে একথা বিজেপির অনেক নেতাই বিশ্বাস করেন না বলে মত রাজনৈতিক মহলের মত। যে সরকার ডিইনভেসমেন্ট করার লক্ষ্য নিয়েই চলছে সেই সরকার ক্ষমতায় এলে সার কারখানা খুলবে এটা অনেকটাই আমজনতার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লক্ষ টাকা যাওয়ার মতোই সোনার পাথরবাটি। দুর্গাপুর পশ্চিম আসনে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। বিজেপির প্রতি বুথে ভোট করানোর মতো স্বক্রিয় কর্মী নেই। দিলীপ ঘোষ শেষ পর্যন্তও নিস্ক্রিয়দের ভোট পথে নামাতে পারেন নি। একটি গোষ্ঠীকে প্রায় ব্রাত্য করে রেখেই চলছেন দিলীপ ঘোষ।

রাজনৈতিক মহলের মতে তৃণমূলের ভোট কমছে না। “সিপিএমের একটি অংশ বিশেষ করে ২৫ থেকে ৫০ পর্যন্ত বয়সের যুব ও মধ্য বয়স্ক কর্মী নেতারা জান লড়িয়ে সিপিএমের ভোট সিপিএমে রাখতে চাইছে। কিন্তু অন্য একটি গোষ্ঠী চাইছে তৃণমূল হারুক সে যে পথেই হোক না কেন”, বলে মত রাজনৈতিক মহলের। এই অবস্থায় বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি দুর্বল। বিজেপির এক নেতা বলেন, “বিজেপির সংগঠনের উপরে ভোট পার করার কথা ভাবলে ভরাডুবি হবে সেটা বুঝে নিয়েছেন দিলীপ ঘোষ”। দুর্গাপুর পুর্ব, দুর্গাপুর পশ্চিম এবং গলসিতে সঙ্ঘ পরিবারের সদস্যদের দিয়ে কাজ করাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ বলে সুত্রের খবর। এই সঙ্ঘ পরিবারের সদস্যরা নীরবে কাজ করে চলছে এই তিন বিধানসভা এলাকায়।

দুর্গাপুর পুর্ব: বিজেপির সাংগঠনিক শক্তি দুর্বল। বিজেপির ভোট টানার মতো কোন মুখ নেই, নেতা নেই। অতি দুর্বল সংগঠন। সিটুর মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থাকলেও সিপিএমের ভোট বাড়বে। দুর্গাপুর ইস্পাতে বারবার দুর্ঘটনা হওয়ার সময় সাংসদ আলুওয়ালিয়াকে দেখা যায় নি, তিনি ব্যস্ত ছিলেন টিকিট আদায়ের ব্যস্ততায়। তৃণমূলের ভোট একই থাকবে বরঞ্চ বাড়বে নগর নিগম এলাকায়। আমলাজোড়ায় ভোট একই থাকবে তৃণমূলের। মলানদিঘিতে সিপিএম ভোট বাড়াবে বিজেপির কমবে। গোপালপুরে তৃণমূলের ভোট একই থাকবে সিপিএমের ভোট বাড়লে বিপদ বিজেপির।

গলসি: সংখ্যালঘু ভোট তৃণমূলের দিকে, সিপিএমের ভোট বাড়লে বিজেপির বিপদ। সাধারন মানুষ প্রশ্ন তুলছেন, “লক্ষীর ভান্ডার মিলছে, কৃষক বন্ধু মিলছে, স্বাস্থ্যসাথী মিলছে কিন্তু মোদি সরকার তাদের জন্য সরাসরি কি করেছে”? ১০০ দিনের কাজ করেও টাকা না পাওয়া ভোট বিজেপির বিরুদ্ধে যাবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। সবাই সক্রিয়ভাবে খাটছেন না দিলীপ ঘোষের হয়ে। গলসির এক নেতাকে আলুওয়ালিয়ার সাথে দেখা যাচ্ছে ইদানিং তার প্রচারে। কেন্দ্রের অধীনে কারখানাগুলি বন্ধ কেন? কেন চালু হল না দশ বছরে? দিলীপ ঘোষ প্রশ্নের মুখে পড়ছেন। ওষুধের দাম বাড়ছে কেন? সারের দাম বাড়ছে কেন? ভোট এসেছে বলে গ্যাসের দাম কমেছে, আগে কমে নি কেন? দিলীপ ঘোষ এসব প্রশ্নে কিন্তু বেসামাল হয়ে পড়ছেন। দিলীপ ঘোষের প্রাতঃভ্রমণ রাজনীতি খাচ্ছে না আমজনতা। সিপিএমের মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায় সিপিএমের ভোট বৃদ্ধিতে অক্ষম বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। আর এটাই আশায় রাখছে বিজেপির দিলীপ ঘোষকে। দুর্গাপুর পুর্ব ও পশ্চিম এবং গলসিতে এবার দিলীপ ঘোষের ভাগ্য নির্ভর করছে সিপিএমের উপর।

Exit mobile version