নিজস্ব প্রতিনিধি, শনিবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৩, পূর্ব বর্ধমান: মহালয়া মানেই দোরগোড়ায় পুজো। এদিনটা এলেই মনে হয় আনন্দময়ী প্রায় বাপের বাড়ি এলেন বলে। এদিনটাতেও তাই সাজোসাজো রব পুর্ব বর্ধমানের রায়ান গ্রামে। এখানেই রয়েছে বর্ধমানের মহারাজার নায়েব চৌধুরী বাড়ির ঐতিহ্যবাহী বনেদী পুজো।
ভারতবর্ষের শাসনের ভার তখন মোঘল সম্রাটদের হাতে। দিল্লির তখত তাউসে তখন দোর্দন্তপ্রতাপ আলমগীর বা আওরঙ্গজেব। সেই ৩৫৭ বছর আগেই এই পুজোর সূচনা। বর্ধমানের বর্ধিষ্ণু গ্রাম রায়ান। শহর যেখানে গ্রামাঞ্চলের সাথে মিতালি পাতিয়েছে সেখানেই অনেক মানুষের বাস। এখানকার বিখ্যাত পুজো এই চৌধুরী বাড়ির পুজো।
চৌধুরী বাড়ির উত্তরপুরুষ বিশ্বেশ্বর চৌধুরী জানান, বৈদিক মতে তাদের পুজো পরিচালিত হয়। মেনে চলা হয় গুপ্তপ্রেস পঞ্জিকার নির্ঘন্ট। এই পুজোর জন্য কাউকে ডাকতে হয় না। যিনি পুজোর পুরোহিত, যিনি ঢাক বাজান কিম্বা যে নাপিত পুষ্প নিয়ে আসেন তাদের জমি দান করা আছে। তারা নিজেরাই এসে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন বছরের পর বছর ধরে। এছাড়াও অগ্রদানী দিয়ে যান গামছা ইত্যাদি।
রথের দিন পুজো করে ঠাকুর গড়ার সূচনা হয়। মহালয়ায় চক্ষুদান করে রঙ করা হয়। এমনকি এই পুজো যাতে দীর্ঘদিন চলে তার ব্যবস্থাও করে গেছেন পূর্ব পুরুষেরা। পুকুর আছে, তার মাছ বিক্রি করেই ভালভাবে সব খরচ নির্বাহ করা হয়। এ বাড়িতে বর্তমানে আশিজন সদস্য আছেন। পুজোর কদিন সবাই এখানে আসেন। সবাই হাতে হাত রেখে কাজ তুলে দেন। তিনি জানান, “আগে বস্ত্রদান হত, নবমীতে বিশেষ ভোগ দেওয়া হয় মাকে”। তিনি আরও জানান, “ষাট বছর আগেই বলি উঠে গেছে এ বাড়ি থেকে। এতেই বোঝা যায় তারা কত উদার মনের ছিলেন। তবে পূর্ব পুরুষের লিখিত বিধিই বাকি সবক্ষেত্রে মেনে চলা হয়”।